,

বৈরী আবহাওয়ায় সেন্টমার্টিনে আটকা জবির ৩৮ শিক্ষার্থী

জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ৩৮ জন শিক্ষার্থী কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপে আটকা পড়েছেন। ব্যাচ ট্যুরে গিয়ে সেখানে আটকা পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার সেন্টমার্টিন থেকে দুপুর আড়াইটায় জাহাজে তাদের ফেরার কথা থাকলেও সমুদ্রের লঘুচাপের কারণে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় তারা ফিরতে পারেননি।

ট্যুর গাইড আব্দুল বারেক ও একাধিক শিক্ষার্থী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আটকা পড়া শিক্ষার্থীরা জানান, বৃহস্পতিবার ফেরার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এদিন ও পরের দিন শুক্রবার শিপ বন্ধ থাকায় শনিবার অবস্থা ভালো থাকলে রওনা দেয়া হবে জানান তারা। সেখানে মাছ, মাংস এসবের সংকট থাকলেও ভাত, ডাল শুকনা খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ট্যুর গাইড হিসেবে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল বারেক বলেন, ‘আমাদের চলে যাওয়ার কথা ছিলো বৃহস্পতিবারই। কিন্তু এদিন জাহাজ বন্ধ তাই যেতে পারিনি। ২ দিন থাকার কথা এখানে, কিন্তু এখন তো এখানে খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায়।’

সেন্টমার্টিনে আটকা পড়া জবি শিক্ষার্থী ও বাঁধন জবি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আলেমা আক্তার লিজা জানান, দুইদিন বৈরী আবহাওয়ার কারণে শিপ বন্ধ ছিল। এখন আবহাওয়া ঠিক হলেও যাত্রী সঙ্কটের কারণে নাকি শিপ ছাড়ছে না। এদিকে শিপ ও ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। এখনও চরম আকার না নিলেও কাল কি হবে বোঝা যাচ্ছে না।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দ্বীপে তরিতরকারি, ডিম, বয়লার মুরগি নেই। কিছু দোকানে আলু, চাল ও ডাল রয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় মাছ ধরাও বন্ধ রয়েছে। দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দা, হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কর্মচারীসহ প্রায় ১২ হাজারের মতো লোক রয়েছেন। তারাও নিত্যপণ্যের সংকটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্বীপের বাসিন্দা ও পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে নিত্য পণ্য সামগ্রিক নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে সার্ভিস ট্রলারে করে মালামাল পরিবহনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিন চারটি বোটে সেখানে খাবার পাঠানো হয়েছে। তবে কোনো ধরনের পর্যটক পরিবহন করা যাবে না বলে নির্দেশনা ও দেয়া হয়।’

সেন্ট মার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. সেলিম হোসেন বলেন, ‘আবহাওয়ার অধিদপ্তরের জারি করা সতর্কসংকেত বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বলবৎ থাকায় পর্যটকবাহী জাহাজ টেকনাফ থেকে ছেড়ে আসেনি। ফলে সেন্ট মার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের দ্বীপে অবস্থান করতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি শুনেছি ৩৮ জন শিক্ষার্থী সেন্টমার্টিনে আটকা পড়েছে। তারা হোটেলে অবস্থান করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তো তারা আসতে পারবে না। আর্থিক প্রয়োজন হলে বিভাগ তা দেখবে। আর প্রশাসনিক কোনো সহায়তা লাগলে আমরা তো আছি। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’

এই বিভাগের আরও খবর